Search This Blog
ফাহিম ইসলামিক ব্লগ: এখানে ইসলামিক জ্ঞান, ওয়াজ, গজল, কোরআন হাদীস ভিত্তিক আলোচনার মাধ্যমে দ্বীনি জ্ঞান শেয়ার করা হয়।
Featured
- Get link
- X
- Other Apps
কাঠবিড়ালি
Seiuridae গোত্রের কাঠবিড়ালি বাংলা ‘৯’-এর মতো লেজ,চঞ্চল-গতি।সামনের দু পা হাতের কাজ করে।পৃথিবীতে কাঠবিড়ালির ৩০০ প্রজাতি-উপজাতে রয়েছে। গেছোদের দলে কাঠবিড়ালি স্তন্যপ্রণী। আমাদের দেশে ৮ প্রজাতির কাঠবিড়ালী আছে।
১। পাঁচ ডোরাযুক্ত কাঠবিড়ালি Funumbulus Pemanti: এদের পিঠের উপর পাঁচটি সাদা ডোরা থাকে, একটি দেহের মাঝ বরাবর এবং প্রতি পাশে দুটি করে। পৃষ্টদেশ বাদামি,পার্শ্ব ও নিচের দিক ধূসরাভ,তার উপর বাদামি আভা আছে। লেজ বাদামি। বাংলাদেশের অধিকাংশ স্থানে এদের পাওয়া যায়।
২। তিন ডোরাযুক্ত কাঠবিড়ালি Funumbulus Palmarum: পিঠে তিনটি ডোরা থাকে; কেন্দ্রভাগে একটি,পাশে একটি,পাশে দুটি ডোরা; বাংলাদেশের লাল ও চিরসবুজ বনে এদের দেখা যায়।
৩। কালো দ্রুতপদী এই প্রাণী Ratufa bicolor: সমস্ত শরীর কালো হলেও পেটের দিকটা লালচে। সিলেট,চট্রগ্রাম ও পাবর্ত্য চট্রাগ্রামে বেশি দেখা যায়।
৪। বাদামি কাঠবিড়ালি Callosciurus Pygerythrus: এরা বর্ণে বাদামি, মুন্ড গোলাকার । সুন্দরবন এবং উপকূলীয় জঙ্গল ছাড়া দেশজুড়ে এদের দেখা যায়।
৫।উড়ন্ত কাঠবিড়ালি Petaurista Petaurista: এদের হাত ও পায়ের সাথে মরীরের পাশ তেকে বেরিয়ে আসা পর্দার মতো ত্বকের মিলন ঘটেছে যা দেখতে পাখনার মতো।এরা এক গাছ থেকে অন্য গাছে গ্লাইডিং করতে সক্ষম । চট্রগ্রাম বিভাগের চিরসবুজ বনে দেখা যায়।
কাঠবিড়ালির লাফ: এরা গাছের ডালের অগ্রভাগে ঘুরে বেড়ায়। এ গাছ থেকে ও গাছে অন্য গাছে যেতে হলে এরা খুুব লম্বা লাফ মেরে চলে যায়। উড়ন্ত কাটবিড়ালিরা আসলে উড়োন। এরা এক গাছ থেকে অন্য গাছে লাফিয়ে যাবার সময় বাতাসে অনেক্ষণ ভেসে থাকতে পারে। আপাতদৃষ্টিতে মনে হয় উড়ে যাচ্ছে। উড়ন্ত কাঠবিড়ালি গ্লাইডেরর মতো ৪৫মিটার পর্যন্ত নামতে পারে। লাফ দেবার সময় এদের ভারসাম্য রক্ষা কর। লেজ ফুলে বাতাস আটাকে রাখে।
কাঠবিড়ালির খাদ্য: কাঠবিড়ালি সর্বভুক প্রানী। পাখির ডিম, তৃণলতা, কীটপতঙ্গ: ফল-ফলাদি, গাছের ছাল, খেজুরের রস খায়। ফলের বাগানে দলে দলে হামলা করে। পাকা ফলের নরমও মাংসালো অংশ মজা করে খায়। গ্রামবাসীরা অবশ্য কাঠবিড়ালিকে অনিষ্টকারী মনে করে না।
কাঠবিড়ালির খেলা: কাঠবিড়ালি কাঠবিড়ালি পেয়ারা তুমি খাও বিদ্রোহী করি কাজী নজরুল ইসলাম কবিতাটি সবার মনে নাড়া দেয়। শিশুরা কাঠবিড়ালির খেলা দেখতে খুব পছন্দ করে। কাঠবিড়ালিও মানুষের সাহচর্যে থাকতে ভালোবাসে। অবশ্য পোষ মানানো তত সহজ নয়। ধরতে গেলে কয়েক সেকেন্ডেই উধাও। এক জায়গায় কখনো স্থির থাকে না চঞ্চলমুখর । জোড়ায় থাকতে পছন্দ করে। শীতকালে খেজুরের রস খেলতে খেলতে খায়।দুপুরে এদের ডাকে কানে তালা যাবার উক্রম হয়। দৌড়াদোড়ি ও ছোটোছুটিতে ঘরের আশেপাশে রীতিমতো ঝড় তুরে দেয়। চঞ্চল হলেও কাঠবিড়ালি ভীরু প্রকৃতির প্রাণী।মানুষ দেখে ভয় পায়।
কাঠবিড়ালির বাসা: কাঠবিড়ালি গাছের মগ ডালে কুটো, লতা, ঘাস-পাতা ইত্যাদি দিয়ে অগোছারো বিরাট বাসা বানায়। কোনো কোনো এলাকায় একের অধিক বাসা তাকে। স্ত্রী-পুরুষ দুজনে মিলে বাসা তৈরির কাজ করে। এরা পরিশ্রমী প্রাণী।
বিভিন্ন প্রজাতির মধ্যে শুধুমাত্র উড়ন্ত কাঠবিড়ালিই নিশাচর প্রাণী। এ জন্য দিনে এদের দেখা যায় না। দিনে এরা লুকিয়ে থাকে কিংবা বাসায় ঘুমিয়ে থাকেউড়ন্ত কাঠবিড়ালি ছাড়া সব কাঠবিড়ালিই দিবাচর। দিনের বেশিরভাগ সময় দৌড়াদৌড়ি ও ছোটাছুটি করে। ক্লান্ত হলে বাসায় কিংবা অন্য কোনো নীরব জায়গায় অল্প সময় শুয়ে থাকে। দু’’ থেকে চারটি ছোট অন্ধ বাচ্চা প্রসবই রেওয়াজ। কিছুদিনের মধ্যেই বাচ্চার চোখ ফোটে।বাবা-মা দুজনে মিলে বাচ্চার যত্ন নেয়। মুখে সংগ্রহ করে। বাচ্চারা যখন বুঝতে শিখে তখন থেকেই নিজের খাবার নিজে সংগ্রহ করে। কাঠবিড়ালিকে ক্ষতিকারক প্রাণী মনে হলেও বিভিন্ন উদ্ভিদের পরাগায়ণ ঘটিয়ে কাঠবিড়ালি আমাদের উপকারই করে। বর্তমানে ভাওয়ালগড়ের আশেপাশে কাঠবিড়ালির সংখ্যা আগের চাইতে বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রচুর ফলের বাগান থাকার কারণেই এ এলাকায় কাঠবিড়ালির সংখ্যা বেশি ।কোনো কোনো সময় কাঠবিড়ালি বুদ্ধির পরিচয় দিয়ে থাকে। কাঠবিড়ালিরা ঘুমাতে যায়।স নির্দিষ্ট সময়ে জেগে এরা কাজ করে। রাতে এরা বেশিরভাগ সময় ঘুমিয়ে কাটায়। দিনে খাবারের খোঁজে বেরিয়ে পড়ে। নির্জন জায়গায় খাবার খেতে পছন্দ করে। মানুষের যাতায়াত থাকলে ওখানে ওরা স্থির থাকে না। অনেকটা চুরি করেই ফলমূল খায়।
Popular Posts
- Get link
- X
- Other Apps
- Get link
- X
- Other Apps
Comments
Post a Comment